কোন আলিমগণ নবীদের পথে রয়েছেন তা বুঝবো কীভাবে?

নবীদের পথে – আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘ আলা আমাদেরকে কুরআনুল কারীমে বলেছেন , ‘ তোমরা যদি না জানো তবে আহ্লুয যিক্র বা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করো। ’ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল ‘ উলামা- উ ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া’ , বা আলিমগণ হলেন নবীদের উত্তরাধিকারী। অতএব আলিমদের কথা শুনা এবং মানার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা অত্যন্ত স্পষ্ট ; এখানে জটিলতার কিছু নেই , আলোচনারও কিছু নেই। সত্যপন্থি আলিমদের কথা শোনা এবং মানা সাধারণ মানুষদের উপর অবশ্য কর্তব্য।

আলিমদের আনুগত্য ত্যাগ করে জাহিলরা যদি কুরআন হাদিসের শুধু বাংলা অনুবাদ পড়ে ব্যাখ্যা করা ও ফতোয়া দেওয়া আরম্ভ করে তাহলে পথভ্রষ্ট হওয়া ছাড়া কোনো গতি গতি নেই। অতএব আমার এই লেখা থেকে যদি কেউ  এমন কোনো অনুসিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করেন যে আমি আলিমদের মর্যাদার অবমাননা করেছি তাহলে সেটা সেই পাঠকের বায়াসনেস, আমার নয়।

কোন আলিমগণ নবীদের পথে রয়েছেন?

আমার আলোচনার বিষয় হলো কোনো আলিম সত্যপন্থী কি না তা আমরা কিভাবে বুঝবো তা নিয়ে সামান্য কিছু কথা বলা। কারণ অনেক সময় দেখা যায় , নিছক সার্টিফিকেট আর জ্ঞানের বহর দেখে আনুগত্যের নামে অনেকের পূজা আরম্ভ করা হয়। এবং বলা হয় যে,

তারা যা বলবে সেটাই সত্য এবং সাধারণ মানুষ তাদের বক্তব্য যাচাই বাছাই করার কোনো অধিকার রাখে না। এর স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে অনেকে বলেন যে, সাধারণ মানুষ তো সাধারণ মানুষই , যদি যাচাই করার ক্ষমতাই তাদের থাকতো তাহলে তো তাদের আর আলিমের কাছে যাওয়ারই কোনো দরকার হতো না।

কোনো ব্যপারে কোনো কোনো আলিমদের গ্রহণ না করা হলে সাধারণদেরকে অপবাদ দেওয়া হয় যে, আলিমের কথা তাদের মনমতো না হওয়ার কারণে তারা মানছে না। বাস্তবে আলিমের কথা মনমতো হওয়ার কারণে তারা মানছে না , নাকি কুরআন সুন্নাহ ও সালাফ আলিমদের কথার সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে মানছে না তা বস্তুনিষ্ঠভাবে যাচাই করা হয় না।

আলিম সাহেবের কথা সে আলিম হওয়ার কারণেই সর্বৈব সত্য, আর সাধারণ মানুষের কথাকে নিছক সে সাধারণ মানুষ হওয়ার কারণেই পরিত্যাজ্য মনে করা হয়। হ্যাঁ , কেউ যদি সত্যি আলিমদের কথা শুধু নিজের মনমতো না হওয়ার কারণেই তা বর্জন করে তাহলে সে যে নিশ্চয়ই মতলববাজ একথা মেনে নিতে আমি মোটেই কুন্ঠা বোধ করি না প্রশ্ন হলো is the truth justified by the man or the man is justified by the truth?

যদি নিছক আলিম হওয়ার কারণে কাউকে এই সার্টিফিকেট দেওয়া হয় যে সে যা বলবে সেটাই সত্য তাহলে আল্লাহ তা‘ আলা নিম্নোক্ত দু ’টি আয়াতে যা বলেছেন তার অ্যাপ্লিকেশন কোন শ্রেণীর উপর হবে ?

  1. আমি যে দলীল প্রমাণ ও পথনির্দেশনা নাযিল করেছি তা মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে কিতাবে বর্ণনা করে দেয়ার পরও যারা তা গোপন করবে , তাদের উপর আল্লাহ লা’ নত দেন , আরও লা’ নত দেয় সকল লা’ নতকারীরা। ( আল বাকারা , আয়াত ১৫৯)
  2. আল্লাহ কিতাবে যা কিছু নাযিল করেছেন তা যারা গোপন করবে এবং তাঁর বিনিময়ে ( দুনিয়ার ) সামান্য মূল্য উপার্জন করবে , তারা তাদের পেটে যা ঢুকায় তা জাহান্নামের আগুন বৈ কিছুই নয়। আল্লাহ তাদের সাথে কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না; তাদের জন্য রয়েছে এক মর্মন্তুদ শাস্তি। (আল বাকারা , আয়াত ১৭৪)

মানুষকে আল্লাহর কালাম শিখানো যেমন সাধারণ মানুষের দায়িত্ব নয় তেমনি আল্লাহর আয়াত গোপন করাও সাধারণ মানুষের কাজ নয়। নবীদের পর যুগে যুগে আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যপারে আলিমদের ভুমিকা যেমন অনস্বিকার্য তেমনই একথাও সত্য যে আল্লাহর কালামের বিকৃতি , অপব্যখ্যা ও তা গোপন করার নিকৃষ্ট কাজটাও এই আলিমদের একটি শ্রেণীই করেছে।

ইহুদী জাতির আলিমদের কথা এ ব্যপারে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য আর আল্লাহর রসূল (সা ) এর হাদীস অনুযায়ী ইহুদীরা যতো ধরণের অপকর্ম করতো এই উম্মতের মধ্যেও সেসব অপকর্মের প্রাদুর্ভাব ঘটবে। অতএব এই উম্মতের মধ্যেও একদল আলিম থাকবে যারা আল্লাহর কালাম গোপন করা এবং তাঁর বিকৃত অর্থ করার নিকৃষ্টতম কুকর্মে লিপ্ত থাকবে। একই সাথে হকপন্থী আলিগনও থাকবেন যারা আপোষহীনভাবে আল্লাহর দ্বীনের প্রচার প্রসার ও প্রতিষ্ঠার মহান কাজে নিয়োজিত থাকবেন।

আমাদের মাঝে এই হকপন্থী এবং বাতিলপন্থী উভয় শ্রেণীর আলিমই যেহেতু থাকবে তাইসাধারণ মানুষের পক্ষে কোনো যাচাই বাছাই ছাড়া শুধু আলিম হওয়ার কারণেই কি কারও অন্ধ আনুগত্য করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে ? প্রশ্ন হলো এই উভয় শ্রেণীর মধ্য থেকে হকপন্থীদেরকে চেনার উপায় কী? এখানে আমি নবীদের ইলমের উত্তরাধিকারিদের মধ্যে কারা সত্যিকার অর্থে নবীদের পথে রয়েছেন , কাদের অবস্থা নবীদের অবস্থার সাথে বেশী মিলে সে সম্পর্কে ভিন্ন আঙ্গিকে কিছু কথা বলবো। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ প্রসঙ্গে বলেন , ‘ আশাদ্দুল বালা – ই বিল আম্বিয়া, ফাল আমসাল ফাল আমসাল ’ অর্থাৎ সব চেয়ে বেশী কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখী হন নবীগন , তারপর যারা তাদের পথের যতো নিকটতম তাদের উপর ততো বেশী বিপদ আপদ আপতিত হয়। একথা প্রমাণের জন্য নিশ্চয়ই আর কোনো দলীল দিতে হবে না যে যারা নবীদের পথের উপর যতো বেশী থাকবেন তাদের অবস্থা নবীদের অবস্থার সাথে ততো বেশী মিলে যাবে।

আল্লাহর বাণী প্রচার করতে গিয়ে যুগে যুগেনবীদেরকে যে যুলুম নির্যাতন ও প্রতিকুলপরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে তাদের
অনেকের বিস্তারিত ঘটনা আল্লাহ তা’ আলাকুরআনে বর্ণনা করেছেন। তাই তার কোনোবিস্তারিত বর্ননার প্রয়োজন নেই। আমি শুধুএমন একটি আয়াত তুলে ধরবো যা তাদেরসকলের অবস্থার একটি ছবি এঁকে দিবে।

নবীদের পথে – আল্লাহ তা ’আলা বলেন ,

‘ তোমরা কি মনে করেছো তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে অথচ তোমাদের উপর সেই ধরণের বিপদ আপদ আসবে না যে
ধরণের বিপদ তোমাদের পুর্বেকারলোকদের উপর এসেছিলো ? দুঃখ কষ্ট, বিপদ আপদ তাদের উপর আপতিত হয়েছিলো, তারা এমন প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিলো রসূল ও তার সাথীগণ বলে উঠলেন , ‘ আল্লাহর সাহায্য কোথায় ?’ ( আল বাকারা আয়াত ২১৪) যুগে যুগে যতো নবী রসুলদেরকে আল্লাহ তা’ আলা প্রেরণ করেছেন তাদের দাওয়াতের সারমর্ম যে ছিলো তাগুতের উৎখাত ও আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা তা সূরা নাহ্লের ৩৬ নং আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। তাই অনিবার্যভাবে প্রায় সকল নবীকেই সমকালীন তাগুতদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে হয়েছে।

কোনো নবী রসুলগনই নিছক কিছু মানুষের ব্যক্তিগত আমল সংশোধনের মধ্যে তাদের কাজকে সিমাবদ্ধ রাখেননি। তারা সকলেই ব্যক্তির আকীদা ও আমল আখলাকের যে সংশোধন দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ ছিলো গোটা সমাজকে সংশোধন করা। সমাজ থেকে সকল ধরণের তাগুতের উৎখাত ও আল্লাহর তাওহীদ প্রতিষ্ঠা। আখেরী নবী মুহাম্মাদ (সা ) এর পর যেহেতু আর কোনো নবী আসবেন না তাই এই কেয়ামত পর্যন্ত সকল মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের এ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এই উম্মতের উপর তথা নবীর জ্ঞানের উত্তরাধিকারী আলিমদের উপর। তাই আল্লাহর সুন্নাহ্র স্বাভাবিক নীতি অনুযায়ী উম্মতে মুহাম্মাদীর নেতৃবর্গ ও আলিমগনের সাথে সমকালীন তাগুতের সংঘাত অনিবার্য , যদি তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অঙ্গিকারাবদ্ধ থাকে।

বাস্তবতাও যে এমনই , তাঁর সাক্ষী আমাদের ১৪০০ বছরের ইতিহাস। আমরা জানি অতিতে যুগে যুগে আল্লাহর কতো নবীকে কতো নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে আমরা জানি কতো লোককে লোহার চিরুনি দিয়ে গোস্ত থেকে হাড্ডি আলাদা করা হয়েছে আমরা জানি আসহাবুল উখদুদের ঘটনায় কি নির্মমতার শিকার হয়েছিলেন ঈমানদাররা আমরা জানি নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন আমরা জানি সাহাবায়ে কেরামের উপর কেমন কঠিন বিপদ আপতিত হয়েছিলো.

আমরা জানি হুসাইন (রা )- কে কেন নির্মমভাবে শাহাদাতের পেয়ালা পান করতে হয়েছে আমরা জানি ইমাম আবু হানীফাকে কিভাবে কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে জীবন দিতে হয়েছে আমরা জানি ইমাম মালিকের উপর কী অত্যাচার করা হয়েছিলো আমরা জানি কী ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল আমরা জানি ইমাম ইবনে তাইমিয়াকে কতো যুলুম অত্যচার সইতে হয়েছে আমরা জানি কিভাবে হাসান আল আল বান্না, সাইয়েদ কুতুবদেরকে হত্যা করা হয়েছে

আমরা দেখেছি কিভাবে আনোয়ার আল আওলাকীকে হারামাইনের খাদেমদের দেশ থেকে উড়ে যাওয়া ড্রোন্ আঘাত হেনেছে। আমরা দেখছি কিভাবে Either with us or against us থিওরি অনুযায়ী পৃথিবী দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান যুগে কুফফাররা তাদের নানা কুটিল চক্রান্তের জালে গোটা পৃথিবীকে অনেক বেশি আবদ্ধ করে ফেলেছে। এর প্রভাবে এখন আপনি মুসলিম উম্মাহ্র মধ্যে বেশ ক’য়েক ধরণের আলিম দেখতে পাবেন। যেমন : ১ – আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা, মুসলিম ও মানবজাতিকে যালিমদের হাত থেকে রক্ষাকল্পে জিহাদে নিয়োজিত। ঘর বাড়ি , স্ত্রী পুত্র , ধন সম্পদ ও আরাম আয়েশ সব কিছু এদেরকে ত্যাগ করতে হয়েছে। এদেরকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয় , এদের উপর ড্রোন করা হয় বোম্বিং করা হয়।

  1.  তাদের সমর্থনকারী , যারা প্রত্যক্ষ ময়দানে এখনও যোগদান করেননি। এরা নিজ ভুমিতেও পরবাসীর মতো আছেন। যখন তখন বিশ্ব তাগুতদের স্থানীয় এজেন্টরা এদেরকে তুলে নিয়ে যায় , যুলুম নির্যাতন করে , জেলে আটকে রাখে , গুম করা হয় হত্যা করা হয় ইত্যাদি।
  2.  রিস্ক – ফ্রী দাওয়াতের কাজ , ব্যক্তিগত আমল ও গভীর জ্ঞান চর্চায় নিয়োজিত। এরা তাবিজ কবজ , পীর পূজা মাজার পূজা ইত্যাদি নানা বিষয়ে মানুষকে সচেতন করেন; তবে পারতপক্ষে এরা এমন কিছু বলেন না যাতে তাগুতদের সাথে তাদের কোনো কনফ্লিক্ট বাঁধে।
  3. আন্তর্জাতিকভাবে সেলিব্রিটি আলিমদের একাংশ ; জিহাদসহ নানা বিষয়ে যাদের বক্তব্য বুশ – ফাহাদ গংদের সাথে মিলে যায়। যারা আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে বেশ সরব , যাদের সভা সেমিনারে স্বয়ং কুফফাররা নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। আরাম আয়েশ কিছু ত্যাগের তো প্রয়োজনই হয় না, বরং ইসলাম তাদের জন্য অন্যরকম এক সেলিব্রিটি হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে।
    প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকদের মধ্যে থাকা আলিমগণ অনেকের কাছে মোটেই বড় আলিম নন ; কারণ , ফাহাদ গংদের
    ইউনিভার্সিটি থেকে তাদের অনেকে বড় কোনো ডিগ্রি নেননি ; নিলেও সেখানে শিক্ষকতার ‘ সৌভাগ্য’ লাভ করেননি , করলেও তারা আসলে ‘ উল্লেখযোগ্য’ কেউ নন , উল্লেখযোগ্য হলেও তারা রাষ্ট্রীয় ‘ সুনজর’ থেকে বঞ্চিত। ‘ বড় আলিম ’ হওয়ার আধুনিক থিওরীতে তারা উত্তির্ণ নন বিধায় তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পান না , তাদেরকে নিয়মিত আলতা স্নো মেখে মেকাপ করে টেলিভিশনে হাজিরা দিতে দেখা যায় না; কুফফারদের ভাষায় তারা মুজাহিদীনদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করতে পারেন না, জিহাদকে তারা স্ট্রাগল এন্ড স্ট্রাইভ বলতে পারেন না … … … ইত্যাদি আরও কতো দোষ তাদের, তার কোনো অন্ত নেই।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর বিগ শট আলিমদেরকে আমরা দেখতে পাই সার্টিফিকেট আর জ্ঞানের ভারে তারা ন্যুজ হয়ে পড়েছেন,
সার্টিফিকেটের ওজন তাদের কোমর ভেঙে দিচ্ছে ; কুরআন হাদিস বুঝার ক্ষেত্রে ব্যকারণিক মারপ্যাচের জটিলতাই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না , উম্মাহর ব্যপারে ভাবার সময় কোথায় তাদের ! আমাদের একদল ভাই রয়েছেন যারা ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণীর আলিমদের কথা ছাড়া আবার কিছুই বিশ্বাস করতে পারেন না। ফিলিস্তিনে মুসলিম নিধন চললে কী হবে , ইরাকে লাখ লাখ মুসলিম শিশু মারা গেলে কী হবে , আফগানে বৃষ্টির মতো বোম্বিং হলে কী হবে , সোমালিয়াতে হত্যাযজ্ঞ চললে কী হবে , ইয়েমেনে ড্রোন অ্যাটাক হলে কী হবে , মিশরে পাখির মতো নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চললে কী হবে ‘এই আলেমরা ’ তো কিছু বলছেন

না!!! অতএব নিশ্চয়ই এই হত্যাযজ্ঞের বৈধতার , কিংবা অন্তত মুখে কুলুপ এটে থাকার ব্যপারে কোনো না কোনো ব্যখ্যা নিশ্চয়ই আছে !!!

হ্যাঁ , আমরা স্বীকার করি অনেক বিষয়ই এমন রয়েছে যা বোঝা সাধারণ মানুষের পক্ষে বিশেষজ্ঞ পণ্ডিতদের সহায়তা ছাড়া
সম্ভব নয়। তাই বলে কি দিক নির্নয়ের জন্য সব সময় ভুগোল বিশারদ হওয়া প্রয়োজন? যারা পুর্ব আকাশ আলোকিত করে সুর্য উদিত হওয়ার পরও তা বিশ্বাস করতে জ্যোতির্বিদের মতামতের অপেক্ষা করেন ,তারা অপেক্ষা করতে থাকুন। পৃথিবী আপনাদের জন্য অপেক্ষা করবে না।

ঈদ মোবারক পিকচার 2022 – ঈদের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস। ঈদ মোবারক স্ট্যাটাস

সালাহুদ্দিন আয়ুবির ব্যপারেও অনেক আলিমঅনেক অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন তার আরবী ভাষায় অদক্ষতা, ইলমের স্বল্পতা , জ্ঞানের অপরিপক্কতা আর বুদ্ধির অদুরদর্শিতা নিয়ে। সেসব আলিমরা আজ কালের গর্ভে কোথায় হারিয়ে গিয়েছেন ইতিহাস তার খবর রাখার প্রয়োজন বোধ করেনি, খড় কুটোর মতো সময়ের স্রোতের সাথে তারা ভেসে গেছেন। কিন্তু সালাহউদ্দিন আয়ুবির নাম এই জাতির ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা আছে , থাকবেও যুগ যুগ ধরে। পাণ্ডিত্যের কমতির কারণে তাকে স্বরণ করতে জাতি মোটেও কুন্ঠাবোধ করেনি।

এখন আপনি কোন শ্রেণীর আলিমদের অনুসারী হবেন, সেটা সম্পুর্ণই আপনার সিদ্ধান্ত। আল্লাহ আমাদেরকে নবীর সত্যিকার
ওয়ারিশদের সঙ্গী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন!!! পুনশ্চঃ অনেকে হয়তো ভাবছেন যে আমাদের ইতিহাসে আমরা তো এমন অনেক বিদগ্ধ উলামায়ে কেরামকে জানি যারা তেমন কোনো লড়াই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেননি ; বরং নিজেদেরকে জ্ঞান তপস্যায় নিয়োজিত রেখেছেন তাহলে তারা কি তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেননি ?

ব্যাপারটি মোটেও তা নয়। এই লড়াই সংগ্রাম হলো একটি ফরজ আমল , তবে কখনও তা হয় ফরদুল কিফায়া আর কখনও তা হয়ে দাঁড়ায় ফারদুল আইন। ইসলামী খিলাফাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত থাকা অবস্থায় এ লড়াই যেহেতু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় সম্পাদিত হতো, তখন মুসলিম উম্মাহর সার্বিক নিরাপত্তা যেহেতু নিশ্চিত ছিলো এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে যেহেতু আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত ছিলো সেহেতু তাদের উপর এটা ফরদুল আইন ছিলো না, বরং দ্বীনী ইল্মকে পরবর্তি প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করাটাই ছিলো সময়ের দাবী। তাই তারা নিজেদেরকে জ্ঞান গবেষণার কাজে নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিয়োজিত করেছেন। তারপরও অনেক উলামায়ে কেরাম এমন ছিলেন যারা যুগপৎ জ্ঞান চর্চা ও যুদ্ধ জিহাদের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। যেমন আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক , ইবন নুহাস রহিমাহুমুল্লাহ্ সহ অনেকেই। আল্লাহ্ আমাদের সকলের হৃদয়ের অন্ধকারকে দূর করুন। আমিন।

1 thought on “কোন আলিমগণ নবীদের পথে রয়েছেন তা বুঝবো কীভাবে?”

Leave a Comment